কলেজশিক্ষিকা খায়রুন নাহার ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে দাবি করেছেন তার স্বামী মামুন। তার দাবি, ছয় লাখ টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রথম সংসারের বড় ছেলের সঙ্গে খায়রুন নাহারের মনোমালিন্য ছিল। এজন্য তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। ফলে আত্মহত্যা করেন তিনি। তবে এ ঘটনাকে ‘হত্যা’ বলে দাবি করেছেন খায়রুন নাহারের স্বজনরা।
নাটোরের গুরুদাসপুরে কলেজছাত্রকে বিয়ের ছয় মাস পর শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের (৪০) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (১৪ আগস্ট) সকালে নাটোর শহরের বলারিপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এলাকার সাবেক কমিশনার নান্নু শেখের ছেলে ছেলে তানভীর সিদ্দিকী সুজনের বাড়ির চারতলা ফ্ল্যাটে থাকতেন তিনি। এ ঘটনায় তার স্বামী মামুনকে (২২) আটক করেছে পুলিশ।
আটক হওয়ার আগে মামুন বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো বিরোধ ছিল না। কিন্তু খাইরুন নাহারের পরিবার বিয়েটা মেনে নেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘খায়রুন নাহার মাত্র দুদিন আগে বেতন তোলে। তার লোন থাকায় ২৭ হাজার টাকার মধ্যে ২০ হাজার টাকা কেটে নেয়। বাকি সাত হাজারের মধ্যে পাঁচ হাজার টাকা তার বড় ছেলেকে দেয়। কিন্তু ছেলের দাবি এখন তার ছয় লাখ টাকা লাগবে। কিন্তু ওই টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ্য তার ছিল না। ফলে বড় ছেলের সঙ্গে তার মনোমালিন্য হয়। এনিয়ে সে মানসিক কষ্টে ভুগছিল। তারপরেই এ ঘটনা। আমি তাকে নানাভাবে বুঝ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। এ কারণে সে আত্মহতা করতে পারে।’
খারুন নাহারের স্বামী কলেজছাত্র মামুন আরও বলেন, ‘রাত ২টার দিকে খায়রন নাহার শ্বাসকষ্টজনিত খুব অসুস্থবোধ করলে আমি ওষুধ নিতে বাজারে যাই। ফিরে এসে দেখি দরজা খোলা। তখনই আমার ভেতরে আশঙ্কা ভর করে। বেডরুমে ঢুকে দেখি খায়রুন নাহার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলছে। আমি তাকে নামানোর জন্য বটির খোঁজে রান্নাঘরে যাই। কিন্তু বটি না পেয়ে গ্যাসলাইটার জ্বালিয়ে ওড়নায় আগুন ধরিয়ে দেই। ওড়না অর্ধেক পুড়ে গেলে টান দিয়ে ছিঁড়ে তার দেহ নামিয়ে মেঝেতে শুইয়ে দেই। এরপর দৌড়ে গিয়ে নিচতালায় নাইটগার্ড নিজাম উদ্দিনকে খবর দেই। ফিরে এসে দিখি সে মারা গেছে। অনেক রাত হওয়ায় আমি পাশের ফ্ল্যাটের কাউকে ডাকিনি।’
নাইটগার্ড নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘রাত ২টার দিকে মামুন নিচে নেমে এসে জানায় সে হাসপাতালে যাবে। তখন আমি গেট খুলে দেই। এরপর ফিরে আসার কিছুক্ষণ পরেই জানায় তার বউ গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছে। এরপর ওপরে গিয়ে শোয়ানো মৃতদেহ দেখতে পাই। পরে পুলিশকে জানানো হয়। এরপর পুলিশ আসে।’