বরিশালে লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করে ছাত্রলীগ কর্মী ও তার বন্ধুদের ওপর হামলা চালিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় ৬ জন আহত হয়েছেন। রোববার (২৮ আগস্ট) জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ২টায় মো. রিমন নামের আহত এক ছাত্রলীগ কর্মীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন সাত যুবক। তাকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। এর কিছুক্ষণ পর ২০-২৫ জন রড, লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সেখানে হামলা চালান। হামলাকারীরা দরজা আটকে চিকিৎসা নিতে আসা রিমন ও তার সঙ্গে থাকা অন্য যুবকদের কুপিয়ে আহত করেন। পরে পুলিশ আসলে হামলাকারীরা চলে যান।
দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, স্থানীয় সংসদ সদস্য পংকজ নাথ ও মেহেন্দীগঞ্জ পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন খানের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছে। বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার সংঘাতে জড়িয়েছেন।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন খান জানান, হামলাকারীরা স্থানীয় সংসদ সদস্য পংকজ নাথের সমর্থক। পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোহেল মোল্লার নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরও জানান, ছাত্রলীগ কর্মী রিমনকে ১২টার দিকে রাস্তা থেকে ধরে কাউন্সিলর সোহেল মোল্লার বাসায় নিয়ে নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে তিনি (কামাল) থানায় ফোন করে রিমনকে উদ্ধার করতে পুলিশ পাঠাতে বলেন। পুলিশ পৌঁছানোর আগে আশপাশের লোকজন রিমনকে উদ্ধার করেন।
কামাল উদ্দিন খান বলেন, গুরুতর আহত রিমন (২৩), জেহাদ (১৯), আবদুল্লাহ (২২), নোমান সরকারকে (২১) উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাছাড়া যুবলীগ নেতা এএস মামুনকে মেহেন্দীগঞ্জ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে কাউন্সিলর সোহেল মোল্লা বলেন, আওয়ামী লীগের ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়তে দেখে ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ইমরান খান ও তারিকসহ বেশ কয়েকজনকে ধাওয়া করে আমার কর্মীরা। এসময় ছাত্রদল কর্মীরা তার বাড়ির মধ্যে ঢুকে ভাঙচুর করে হাসপাতালে চলে যায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আমার কর্মীরা হাসপাতালে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
ছাত্রলীগ কর্মী রিমন কীভাবে আহত হলেন- জানতে চাইলে সোহেল মোল্লা বলেন, ব্যানার ফেস্টুন যারা ছিঁড়েছেন তারা ছাত্রদল কর্মী। রিমন তাদের বন্ধু। ঘটনার সময় রিমন তাদের সঙ্গে ছিলেন। তবে কীভাবে রিমন আহত হয়েছে এটা তার জানা নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইয়েদ মো. আমরুল্লাহ বলেন, হামলায় হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও সেবিকারা অতঙ্কিত হয়ে পড়েন। হামলায় হাসপাতালের আসবাবপত্রের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি।
মেহেন্দীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে হামলার খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে পুলিশ যাওয়ার আগে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। আহতদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।