ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সকাল থেকেই বাগেরহাটে অঝোর বৃষ্টি হচ্ছে। মোংলা সমুদ্রবন্দরে তখন ৭ নম্বর বিপৎসংকেত। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডবের রাতে এক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাত শিশু জন্ম নিয়েছে। তবে ভোর থেকেই বিদ্যুৎ না থাকায় রাতে চার্জার লাইট, মোবাইলের টর্চ ও মোমবাতির আলোয় প্রসূতিদের সন্তান প্রসবের কাজ শুরু হয়। এভাবে রাতেই সাতজন প্রসূতি মায়ের ডেলিভারি সম্পন্ন করা হয়। এ ঘটনায় প্রশংসায় ভাসছেন হাসপাতালটির চিকিৎসক ও নার্সরা। সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাতে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তারা ভূমিষ্ঠ হয়।
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাহীন জানান, ঝড়ের রাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় অন্ধকারের মধ্যে সাত প্রসূতি মাকে নিয়ে স্বজনরা হাসপাতালে হাজির হন। এ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় অন্য নার্সদের নিয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রসূতি মায়ের সন্তান প্রসব করানো হয়। সাত শিশুই সুস্থ আছে। চিকিৎসক আরও বলেন, প্রসূতি মায়েরা হলেন-সিগনাল টাওয়ার এলাকার জাকির হাওলাদারের স্ত্রী মনিরা (৩৩), মাকোরঢোন এলাকার বাসিন্দা সোহাগ সরদারের স্ত্রী মুক্তা (১৯), আরাজী মাকোরঢোন এলাকার মেহেদী হাসানের স্ত্রী বনানী (১৯), বাঁশতলা এলাকার মাছুমের স্ত্রী নাঈমা (২০), নারকেলতলা এলাকার মজিবর হাওলাদারের স্ত্রী রাজিয়া (৩০), মালগাজী এলাকার মানিক শেখে স্ত্রী মিলা (২৬) ও ভাসানী সড়কের আবুল হোসেনের স্ত্রী শাহনাজ বেগম (৪২)। তারা সবাই সুস্থ আছেন বলেন জানান ডা. শাহীন।
মুক্তা বেগম নামের এক প্রসূতি মা বলেন, আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করলে স্থানীয়ভাবে প্রসব করানোর জন্য কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না। কোনো উপায় করতে না পেরে ঝড়ের মধ্যে মাকোরঢোন থেকে হাসপাতালে আসেন। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছাতে পৌঁছাতে অন্ধকার হয়ে যায়। চিকিৎসক ও নার্সরা মোমবাতির আলো দিয়ে তাঁর সন্তান প্রসব করান।
এ ঘটনায় হাসপাতালের ডা. শাহীনসহ পুরো টিমকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার।