দেশে ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করা হয় বলে স্বীকার করে নিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক। গতকাল রোববার (৬ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করা হয় সেটা আমরা জানি। তবে এটা হয় কিছু কিছু ক্ষেত্রে, খুব বেশি নয়। এছাড়া ভেজাল ওষুধ নিয়ন্ত্রণের জন্য ঔষধ প্রশাসন কাজ করে। নকল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত রোধে তাদের নানা ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে।
এসময় ভেজাল ওষুধের ক্ষতিকারক দিকগুলোর কথা তুলে ধরে সাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ওষুধে ভেজাল হলে কখনো কখনো রোগী মৃত্যুমুখে পতিত হয়। রোগীর কিডনি বিকল হওয়ার পাশাপাশি নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এটি প্রতিরোধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সরকার ওষুধে ভেজালকারীদের অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করে। ইতোমধ্যে ওষুধ আইন-২০২২ এর একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। যা মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদিত হয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, আইনে লাইসেন্স ব্যতীত ওষুধ উৎপাদনকারীদের ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। লাইসেন্স ব্যতীত ইন্টারনেটে বা যে কোনোভাবে ওষুধ বিক্রি করলে তার জন্য ৫ লাখ টাকা জরিমানা ও ৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা আছে। আর কেউ যদি লাইসেন্স ব্যতীত ওষুধ আমদানি করে তার ১০ বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত ওষুধ প্রশাসন ড্রাগ কোর্টে ১০১টি মামলা করেছে। ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মামলা হয়েছে ৩০০টি, মোবাইল কোর্টে মামলা হয়েছে প্রায় ৮ হাজারটি। জরিমানা করা হয়েছে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা আর কারাদণ্ড হয়েছে প্রায় ২০০ জনের। ওষুধ জব্দ করা হয়েছে প্রায় ৮০ কোটি টাকার।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ভেজাল ওষুধ তৈরির জন্য ২০টি কারখানা সিলগালা করা হয়েছে, তাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে ভেজাল ওষুধ তৈরি, বিক্রি, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি, ভেজাল ওষুধ আমদানি যাতে না করা হয় তার জন্য আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।