শিক্ষা অর্জনের জন্য বয়স কোনো বিষয় না, দরকার শুধু ইচ্ছাশক্তি। সেটাই প্রমাণ করে দিলেন ৪৬ বছর বয়সী মঞ্জুয়ারা খাতুন। ছেলে মেহেদী হাসানের সঙ্গে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন মা মঞ্জুয়ারা খাতুন। বেশ কৃতিত্বের সঙ্গে পাসও করেছেন। ছেলে ও মায়ের একসঙ্গে এমন সাফল্যে পরিবারের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে।
সোমবার চলতি বছরের এসএসসির প্রকাশিত ফলাফলে মা মঞ্জুয়ারা খাতুন পেয়েছেন জিপিএ-৪.৮৯ এবং ছেলে মেহেদী হাসান পেয়েছে জিপিএ-৪.৯৩।
জানা গেছে, মঞ্জুয়ারা কারিগরি বোর্ডের অধীনে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ শামীমা জাফর মৎস্য ইন্সটিটিউট থেকে এবং ছেলে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ বিএম কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাদের বাড়ি ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে। মঞ্জুয়ারার স্বামী অটো ভ্যানচালক আব্দুর রহিম। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে।
মঞ্জুয়ারা খাতুন বলেন, আমার খুব ইচ্ছে ছিল পড়াশোনা করার। কিন্তু নানা কারণে হয়ে উঠেনি। এরমধ্যেই দুই বছর আগে খানমরিচ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউটে ভর্তি হয়েছিলাম। আর এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলাম। আমার পড়াশোনায় আমার স্বামীও বেশ সহযোগিতা করেছেন।
তিনি বলেন, আমার স্বামী অটোভ্যান চালিয়ে আমাদের সংসার ও লেখাপড়ার খরচ যুগিয়েছেন। তার অনুপ্রেরণা আর আমার ইচ্ছাশক্তি মিলেই এই ফলাফল করেছি। এখন উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের আকাঙ্ক্ষা আরো বেড়ে গেল। সুযোগ পেলে আরো পড়াশোনা করতে চাই।
ছেলে মেহেদী হাসান বলেন, আমরা অনেক কষ্টের মাঝেও পড়ালেখা চালিয়ে গেছি। আমার মা সংসারে মাঝেও পরীক্ষা দিয়েছেন এবং বেশ ভালো ফলাফল নিয়ে পাসও করেছেন। এজন্য আমি অত্যন্ত খুশি।
মঞ্জুয়ারার স্বামী আব্দুর রহিম জানান, স্ত্রী ও ছেলে একসঙ্গে এসএসসি পাস করায় আমি ভীষণ খুশি। পাসের খবর পেয়েই সবাইকে মিষ্টি খাইয়েছি। আমার ইচ্ছা ছেলে-মেয়ের সঙ্গে স্ত্রীর পড়াশোনাও চালিয়ে নিয়ে যাওয়া।